ভারত ক্রমশ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। বর্তমান সমস্ত কিছুই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে করা সম্ভব। আগে ভোটার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের জন্য লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হতো। এখন আর সেই পুরনো দিন নাই এখন ঘরে বসে অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আবেদন জমা দেওয়ার পর কার্ড হাতে পেতে ৩০-৪৫ দিন সময় লাগত। এবার সেই ঝামেলার অবসান ঘটল। নির্বাচন কমিশন অফ ইন্ডিয়া (ECI) নতুন Standard Operating Procedure (SOP) চালু করেছে। এর ফলে এখন মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে ঘরে বসেই ভোটার কার্ড (EPIC) পাওয়া যাবে। তাই এখনো যাদের ভোটার কার্ড হয়নি তারা ভোটার কার্ড বানিয়ে নিতে পারবেন ঘরে বসেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই। এছাড়াও যদি কারো ভোটার কার্ডে ভুল থাকে বা সংশোধন করার প্রয়োজন হয় সেটিও ঘরে বসে করা সম্ভব।

নতুন নিয়মে কী কী বদল হলো?

ভোটার কার্ডের নতুন নিয়মে বেশ কিছু বড় বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আপনি যদি ভোটার কার্ড নতুন করে বানাতে চান বা সংশোধন করতে চান তাহলে আপনি অবশ্যই নতুন এই নিয়মগুলো জেনে নিতে পারেন।

  • আগে ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করতে অফিসে ঘুরতে হতো। এখন আর নয়, সবকিছু অনলাইনেই করা যাবে। এখন অনলাইনে ঘরে বসেই আপনি সমস্ত কাজ করতে পারবেন।
  • নতুন কার্ড বা পুরনো কার্ডের সংশোধন—দুটোই সম্ভব হবে বাড়িতে বসেই। বর্তমান ভারত ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দিকে আগাচ্ছে তাই খুব সহজেই সমস্ত কিছু সমাধান করা যাচ্ছে।
  • কার্ড তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা Department of Posts (DoP)-এর মাধ্যমে সরাসরি বাড়িতে পৌঁছে যাবে। এর ফলে আপনার কোন ঝামেলা নেই সমস্ত কিছু খুব সহজেই হয়ে যাবে।
  • আবেদনকারীরা পাবেন SMS অ্যালার্টরিয়েল টাইম ট্র্যাকিং সুবিধা। এর ফলে আপনি আপনার ভোটার কার্ডের স্ট্যাটাস সর্বদাই জানতে পারবেন।

অনলাইনে ভোটার আইডি আবেদন করার ধাপ

অনলাইনে ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করা যাবে NVSP Portal (voters.eci.gov.in)-এ।

Step-by-Step প্রক্রিয়া:

  1. ওয়েবসাইটে গিয়ে মোবাইল নম্বর ও ইমেল আইডি দিয়ে সাইন-আপ করুন। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নিজস্ব মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল আইডি থাকতে হবে।
  2. একটি ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। এক্ষেত্রে যদি আগে ইউজার আইডি হয় পাসওয়ার্ড বানানো থাকে তাহলে লগইন করুন।
  3. রেজিস্টার্ড মোবাইলে আসা OTP দিয়ে লগইন করুন।
  4. লগইন করে “Fill Form 6” অপশন নির্বাচন করুন।
  5. নাম, জন্মতারিখ, বাবা-মায়ের নাম, ঠিকানা ইত্যাদি ব্যক্তিগত তথ্য দিন।
  6. প্রয়োজনীয় নথি স্ক্যান বা ছবি তুলে আপলোড করুন
  7. সমস্ত তথ্য যাচাই করে সাবমিট করুন
  8. সাবমিটের পর একটি রেফারেন্স নম্বর পাওয়া যাবে, যেটি দিয়ে স্ট্যাটাস ট্র্যাক করা যাবে।

ভোটার আইডির জন্য প্রয়োজনীয় নথি

নথির নাম ব্যবহার
আধার কার্ড / প্যান কার্ড / পাসপোর্ট / এডমিট কার্ড পরিচয়ের প্রমাণ
জন্ম সনদ / স্কুল সার্টিফিকেট বয়স প্রমাণ
রেশন কার্ড / বিদ্যুৎ বিল / ব্যাঙ্ক পাসবুক ঠিকানার প্রমাণ
পাসপোর্ট সাইজ ছবি আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য

ভোটার কার্ড আবেদন স্ট্যাটাস চেক করার নিয়ম

  1. এক্ষেত্রে আপনি যেই ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন জানালেন সেই ওয়েবসাইটে গিয়েই NVSP Portal লগইন করতে হবে।
  2. এক্ষেত্রে আপনাকে ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন
  3. “Track Application Status” অপশনে ক্লিক করুন
  4. রেফারেন্স নম্বর ও রাজ্য নির্বাচন করুন
  5. সাবমিট করার পর আপনার আবেদনটির বর্তমান স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন। এখান থেকে আপনি চেক করে নিতে পারবেন আপনার সমস্ত স্ট্যাটাস এবং কবে আপনার কার্ডে হাতে পাবেন সেটিও আপনি এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন।

পুরনো বনাম নতুন প্রক্রিয়া

বিষয় পুরনো নিয়ম নতুন নিয়ম (২০২৫)
সময়সীমা ৩০-৪৫ দিন মাত্র ১৫ দিন
আবেদন প্রক্রিয়া অফলাইনে ফর্ম জমা সম্পূর্ণ অনলাইন (NVSP)
ট্র্যাকিং সীমিত রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং + SMS
ডেলিভারি হাতে হাতে / পোস্টে দেরি সরাসরি বাড়িতে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে

নতুন ব্যবস্থার সুবিধা

  • মাত্র ১৫ দিনে ভোটার কার্ড ডেলিভারি
  • ঘরে বসেই আবেদন করার সুযোগ
  • রিয়েল টাইম ট্র্যাকিং ও SMS অ্যালার্ট সুবিধা
  • অফিসে ঘোরাঘুরি নয়, ঝামেলাহীন প্রক্রিয়া
  • ডিজিটাল ইন্ডিয়া-র পথে আরও এক ধাপ অগ্রগতি

ভারতের গণতন্ত্রে ভোটার আইডি একটি অপরিহার্য নথি। ভোটার কার্ড সকলের থাকা দরকার এজন্য ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া প্রতিটি নাগরিকের ভোটার কার্ড বানানো বাধ্যতামূলক। ভোটার কার্ড হলো ভারতের ভোটদানের এবং নাগরিকত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি। আগে যেখানে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হতো, এখন মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই ভোটার কার্ড হাতে পাওয়া সম্ভব। এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সাধারণ নাগরিকদের জন্য বড় স্বস্তির খবর এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।